শবে বরাত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাত। তবে এই রাত সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা ও কুসংস্কার প্রচলিত আছে, যা থেকে আমাদের সাবধান থাকা উচিত। নিচে কয়েকটি সাধারণ কুসংস্কার আলোচনা করা হলো:
১. ভাগ্য নির্ধারিত হওয়ার রাত:
অনেকেই মনে করেন যে শবে বরাতে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তবে, ইসলামে বলা হয়েছে যে মানুষের ভাগ্য আল্লাহ তাআলা আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন। শবে বরাতে ইবাদতের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তাঁর রহমত কামনা করে।
২. বিশেষ খাবার তৈরি করা:
কিছু মানুষ শবে বরাতে বিশেষ খাবার তৈরি করাকে জরুরি মনে করেন। তবে, ইসলামে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি ইবাদতের প্রতি বেশি মনোযোগ দিন।
৩. হালুয়া-রুটি তৈরি ও বিতরণ:
শবে বরাতে হালুয়া-রুটি তৈরি ও বিতরণ করা একটি প্রচলিত প্রথা। তবে, এটি শবে বরাতের কোনো অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়। এটি একটি লোকজ সংস্কৃতি, যা খাবারের আনন্দ ও ভাগাভাগির প্রতীক হিসেবে প্রচলিত।
৪. কবরস্থান আলোকিত করা:
কিছু মানুষ শবে বরাতে কবরস্থান আলোকিত করেন। তবে, ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। বরং, কবরস্থানে গিয়ে মৃতদের জন্য দোয়া করা এবং তাদের মাগফিরাত কামনা করা উচিত।
৫. শবে বরাতে শুধু নামাজ পড়া:
শবে বরাতে শুধু নামাজ পড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। এই রাতে কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া, ইস্তেগফার, জিকির-তাসবিহসহ বিভিন্ন ধরনের ইবাদত করা উচিত।
৬. শবে বরাতের রাতে ঘুমানো:
অনেকেই মনে করেন যে শবে বরাতের রাতে ঘুমানো উচিত নয়। তবে, আপনি আপনার শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন এবং ইবাদতের জন্য যথেষ্ট সময় বের করুন।
৭. শবে বরাত উদযাপন করা:
কিছু মানুষ শবে বরাতকে একটি উৎসবের মতো উদযাপন করেন। তবে, এটি একটি ইবাদতের রাত। এই রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং তাঁর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করাই মূল উদ্দেশ্য।
৮. আতশবাজি ও আলোকসজ্জা করা:
কিছু মানুষ শবে বরাতে আতশবাজি ও আলোকসজ্জা করেন। তবে, এটি সম্পূর্ণরূপে একটি ভুল কাজ। এতে অর্থের অপচয় হয় এবং পরিবেশের ক্ষতি হয়।
আমাদের উচিত শবে বরাত সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং কুসংস্কার থেকে দূরে থাকা। এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
No comments:
Post a Comment