শবে কদর নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি রাত। তবে এই রাত সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা ও কুসংস্কার প্রচলিত আছে, যা থেকে আমাদের সাবধান থাকা উচিত। নিচে কয়েকটি সাধারণ কুসংস্কার আলোচনা করা হলো:
১. নির্দিষ্ট রাতে নিশ্চিতভাবে শবে কদর হওয়া:
অনেকেই মনে করেন যে শবে কদর রমজান মাসের ২৭তম রাতেই হবে। তবে, হাদিসে বলা হয়েছে যে শবে কদর রমজানের শেষ দশকের যেকোনো বিজোড় রাতে হতে পারে। তাই, শুধুমাত্র ২৭তম রাতকে শবে কদর মনে করা এবং অন্য রাতগুলোর গুরুত্ব না দেওয়া ভুল।
২. শবে কদরে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা যাওয়া:
কিছু মানুষ মনে করেন যে শবে কদরে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যেমন - আকাশ উজ্জ্বল হয়ে যাওয়া, গাছপালা সেজদা করা, ইত্যাদি। তবে, হাদিসে এই ধরনের কোনো লক্ষণের কথা বলা হয়নি। শবে কদরের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এই রাতে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা।
৩. শবে কদরে ভাগ্য নির্ধারিত হওয়া:
অনেকের ধারণা, শবে কদরে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তবে, ইসলামে বলা হয়েছে যে মানুষের ভাগ্য আল্লাহ তাআলা আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন। শবে কদরে ইবাদতের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তাঁর রহমত কামনা করে।
৪. শবে কদরে বিশেষ খাবার তৈরি করা:
কিছু মানুষ শবে কদরে বিশেষ খাবার তৈরি করাকে জরুরি মনে করেন। তবে, ইসলামে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি ইবাদতের প্রতি বেশি মনোযোগ দিন।
৫. শবে কদরে শুধু নামাজ পড়া:
শবে কদরে শুধু নামাজ পড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। এই রাতে কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া, ইস্তেগফার, জিকির-তাসবিহসহ বিভিন্ন ধরনের ইবাদত করা উচিত।
৬. শবে কদরের রাতে ঘুমানো:
অনেকেই মনে করেন যে শবে কদরের রাতে ঘুমানো উচিত নয়। তবে, আপনি আপনার শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন এবং ইবাদতের জন্য যথেষ্ট সময় বের করুন।
৭. শবে কদর উদযাপন করা:
কিছু মানুষ শবে কদরকে একটি উৎসবের মতো উদযাপন করেন। তবে, এটি একটি ইবাদতের রাত। এই রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং তাঁর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করাই মূল উদ্দেশ্য।
আমাদের উচিত শবে কদর সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং কুসংস্কার থেকে দূরে থাকা। এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
No comments:
Post a Comment